কিন্তু সেই সাহস, সেই ভরসা-কোনভাবেই খুঁজে পাই না!
বিয়ের ৮-৯ দিনের মাথায় একদিন দুপুরে, ভীষণ ক্লান্ত লাগছিলো… শরীরটা যেন আর চলছিলো না। তাই বিছানা না পেয়ে রুমের মেঝেতেই একটু গা এলিয়ে দিয়েছিলাম। পাশে আমার স্বামী কোরআন পড়ছিলো, ভাবলাম বিরক্ত না করে একটু চোখটা বন্ধ করি। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারিনি।
তখন রান্নাঘরে ছিলেন শুধু আমার শাশুড়ি। হঠাৎ চেঁচামেচি-"রুম থেকে বের হচ্ছো না কেন?"
বাস্তবতা হলো, আমি প্রতিদিন সবকিছু ধুয়ে-মুছে, গুছিয়ে রাখতাম। উনি আমাকে রান্নাঘরে বেশিদিন রাখতেন না, শুধু ভাত রান্না করতে দিতেন। তাও আমি করতাম। তবুও সেদিন…
ঘুমের মাঝেই হঠাৎ টের পেলাম-আমার স্বামী ২-৩টা লাথি মেরেছে! আমাকে জোর করে উঠিয়ে পাঠাচ্ছে মায়ের কাছে!
চোখ খুলে বসে পড়লাম। কিছু বুঝতে সময় লাগছিলো-এত হঠাৎ? এত রাগ? এতটা নির্মমতা?
শুধু ৫ মিনিটের জন্য ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে ছিলাম। তখনো বুঝে উঠতে পারিনি, এর মানে কী হতে চলেছে আমার জীবনের জন্য।
আমার আর তার সংসার টিকেছিলো মাত্র ১৯ দিন। কিন্তু একটাও দিন ছিলো না যেদিন আমি নির্ভার ছিলাম, যেদিন একটু ভালোবাসা পেয়েছিলাম।
আজ ৯ বছর কেটে গেছে। শাশুড়ি মা নেই-আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন। আর সে? ডিভোর্স দেয়ার পরে আবার সংসার পেতেছে…
আমি? আমি একা আছি। সাহস পাইনি আর একবার চেষ্টা করার। সেই যন্ত্রণাময় দিনগুলো আজও তাড়া করে ফেরে। ঘুম ভেঙে মাঝরাতে কাঁদতে কাঁদতে ভাবি-আমি কী এতটা খারাপ ছিলাম?
তবুও, মাঝেমধ্যে বুকের গভীরে এক ধরনের শূন্যতা বাজে। একটা আপন মানুষ চাই… একটা ছোট সংসার চাই… একটু নির্ভরতা, একটু ভালোবাসা…
কিন্তু সেই সাহস, সেই ভরসা-কোনভাবেই খুঁজে পাই না।
আমি কী করবো? কীভাবে এই ভয় পেরিয়ে যাবো?
আপনার জীবনের গল্প আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইলে, অনুগ্রহ করে মেইল করুন: attokotha@silentnotebook.com। এছাড়াও, আপনি সরাসরি Publish My Attokotha বিভাগে গিয়েও আপনার আত্মকথা প্রকাশের জন্য পাঠাতে পারেন।